SAVE WEST BENGAL FROM TRINAMOOL CONGRESS

RESIST FASCIST TERROR IN WB BY TMC-MAOIST-POLICE-MEDIA NEXUS

(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)

Tuesday, April 2, 2013

জ্বরের ইতিকথা


জ্বরের ইতিকথা 

ডাঃ গৌতম দাস

জ্বর। এটি কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। এখন তো জ্বর শব্দটি প্রতিটি মানুষের কাছে আতঙ্ক। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যেভাবে বিভিন্ন জ্বরের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে তাতে আতঙ্ক থাকাটাই স্বাভাবিক। কলকাতা সহ অন্যান্য জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেকের প্রাণ গেছে। যে কোনো মৃত্যুই বেদনার। তবে অনেক সময় দেখা যায় রোগীর পরিবার মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রথমে ডাক্তারকেই দায়ী করে। এটা মোটেই কাম্য নয়। কেননা ডাক্তাররা রোগীকে বাঁচাতেই চান। রোগীরা প্রথমে নিজেরা কুসংস্কারে বশবর্তী হয়ে নানা তুকতাক করে বিফল হন, কেউ বা নিজের ডাক্তারী নিজে করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হন, আবার অনেকে ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুও হয়!

প্রথমেই উল্লেখ করেছি জ্বর কোনো রোগ নয়। বিভিন্ন ধরনের জ্বর হতে পারে। তবে সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, নিউমোনিয়া, হাম, ফুসফুস এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ ইত্যাদি নানা কারণে জ্বর হতে পারে। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং ডেঙ্গু প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা খুবই কঠিন। যেহেতু বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি তাই এরোগ নিয়ে প্রাথমিক ধারণা জানিয়ে রাখি।

ডেঙ্গু : ডেঙ্গু একটি ভাইরাস। ভাইরাসজনিত রোগের সাধারণত কোনো প্রতিষেধক নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। ডেঙ্গু অভিধান অনুযায়ী ইংরেজি শব্দটির প্রকৃত উচ্চারণ ডেঙ্গি, তবে ডেঙ্গু শব্দটি বহুল প্রচলিত। অন্যান্য ভাইরাল রোগের মতো এরও কোনো প্রতিষেধক নেই, টিকাও নেই। লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। অন্য ভাইরাল ফিভারের মতো এটিও আপনা আপনি সেরে যায় সাত দিনের মধ্যে। তবে মূল ভয়টা হচ্ছে এর পরবর্তী জটিলতা নিয়ে। যদি সময়মতো ডেঙ্গুর যথাযথভাবে চিকিৎসা করা না যায়, তবে রোগীর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। দেখা দেয় ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার বা রক্তক্ষরণকারী ডেঙ্গু জ্বর।

সাধারণত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ালে ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার দেহে ঢোকে। সেই ভাইরাসবাহী এডিস মশা কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গু ভাইরাস তাঁর দেহে ঢুকে পড়ে এবং আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। কাজেই যেহেতু এডিস মশা এ রোগের বাহক, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশের এলাকাজুড়ে মশা মারার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্রও ধ্বংস করতে হবে।

লক্ষণ: হঠাৎ করে জ্বর। কপালে, গায়ে, চোখে ব্যথা। চোখ নাড়ালে, এদিক ওদিক তাকালেও ব্যথা। দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া। পায়খানার সঙ্গে রক্ত পড়া। কালো কিংবা লালচে কালো রঙের পায়খানা, এমনকি প্রস্রাবের সঙ্গেও অনেক সময় রক্ত বের হতে পারে। ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার খুবই মারাত্মক। মস্তিষ্কেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে খুব দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

কীভাবে বোঝা যাবে : অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অস্থিরতা, অবসন্নভাব, পেটে তীব্র ব্যথা, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, ত্বক কুঁচকে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, বেশি বেশি প্রস্রাব হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ফের রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। প্রচুর তরল খাবার খাওয়াতে হবে। পরিশুদ্ধ জল যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়াতে হবে। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সময়মতো সঠিক ব্যবস্থাপনায় ডেঙ্গু হেমারেজিক জ্বরও সারিয়ে তোলা যায়। বেশি রক্তক্ষরণ হলে ফ্রেশফ্রোজেন প্লাজমা কিংবা কনসেনট্রেটেড প্লেটলেট, অথবা প্রয়োজনে হোল ব্লাড প্রয়োজন হতে পারে।

রোগীর মৃত্যু হয় কেন : অত্যধিক তাপমাত্রার জ্বরের জন্য দেহে দ্রুত জলশূন্যতা দেখা দেয়। কোষের অভ্যন্তরীণ তরল কমে যায়, আশেপাশের রক্তনালীতে চাপ পড়ে, শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ইন্টারনাল ব্লিডিং। বেশি মাত্রায় রক্তক্ষরণ চলতে থাকলে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেট সংখ্যায় কমে যায়। প্লেটলেট কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে রক্তক্ষরণ আরও বাড়তে থাকে। দেখা দেয় শক সিনড্রম। শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। যথাযথ চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনার অভাবে রোগীর দ্রুত অবনতি ঘটে। রোগীর মৃত্যু হয়।

কোন্‌ পরীক্ষা করতে হবে : রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শমতো রক্তে বিশেষ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নির্ণয়ের মাধ্যমে সাধারণত ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়। প্রথমদিন এন এস আই পরীক্ষা, চতুর্থদিনের মাথায় প্লেটলেট কাউন্ট করাতে হবে। এটি ব্যয়বহুল পরীক্ষা হলেও করতে হবে। সাধারণ জ্বর যদি উচ্চ তাপমাত্রায় (১০৩-র বেশি) হয়, তাহলে প্রথমেই রক্তের একটি রুটিন পরীক্ষা করে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেট কাউন্ট দেখে নেওয়াটা জরুরী। যদি প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা সংখ্যায় এক লাখের কম হয়, তাহলে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চিকিৎসা : বেশির ভাগ ডেঙ্গু জ্বরই সাত দিনের মধ্যে সেরে যায় এবং অধিকাংশই ভয়াবহ নয়। প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণে বিশুদ্ধ জল খাওয়া, বিশ্রাম ও তরল খাবার, ও আর এস, নুন চিনির জল খেতে হবে। সঙ্গে জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ। সাধারণ ডেঙ্গুর চিকিৎসা এই। তবে ব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে অ্যাসপিরিন বা ক্লোফেনাক-জাতীয় ওষুধ মোটেই নয়। এতে রক্তক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে। জ্বরের সঙ্গে রক্তক্ষরণের লক্ষণ দেখামাত্র হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে বিশেষ চিকিৎসার জন্য।

কখন মশা কামড়ায় : ডেঙ্গু’র মশা, মানে এডিস মশা সকাল-সন্ধ্যায় কামড়ায়। ভোরে সূর্যোদয়ের আধঘণ্টার মধ্যে এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আধঘণ্টা আগে এডিস মশা কামড়াতে পছন্দ করে। তাই এই দুই সময়ে মশার কামড় থেকে সাবধান থাকতে হবে। আমরা যদি পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকি, তাহলে ডেঙ্গুকে অনেকটাই মোকাবিলা করা সম্ভব। কাজেই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নিজের ঘর ও আঙিনায় মশার উৎস ধ্বংস করুন। ফুলের টব, পুরোনো ক্যান বা পাত্র, এ সি মেশিনের জমা জল, গামলা, গাছের কোটরে জমা জল পরিষ্কার, ছোট আবদ্ধ জায়গায় যাতে বৃষ্টির জল জমে না থাকে— এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিজেকেই উদ্যোগী হতে হবে।

চিকুনগুনিয়া : চিকুনগুনিয়া জ্বরের কারণ একটি আলফা ভাইরাস, গোত্র টোগা ভাইরাস। এটি মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গুর বাহক এডিস Adese Aegypti মশা চিকুনগুনিয়ার ভাইরাসেরও বাহক। অন্যান্য মশার কামড়েও এ রোগের বিস্তার হতে পারে তবে তা সীমিত আকারে। এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে জ্বর, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, মাংসপেশীতে ব্যথা, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং বমি। হাড়ের জয়েন্টগুলি ফুলে যাওয়া এই লক্ষণ চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর মধ্যের প্রধান পার্থক্য। ডেঙ্গুতে অস্থিসন্ধি ফোলে না। চিকুনগুনিয়ায় উলটো। এডিস মশা কামড়ানোর ৩-৭দিনের ভেতর চিকুনগুনিয়া জ্বরের আক্রমণ হয়। এই জ্বর কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে। অল্প কিছু ক্ষেত্রে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা কয়েক মাস থাকতে পারে। একবার চিকুনগুনিয়া হলে সারা জীবনে আর চিকুনগুনিয়ার জ্বর হয় না। চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসায় কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। এই জ্বরের কোনো টিকা নেই। জ্বরের চিকিৎসায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ এবং প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ থেকে বিরত থাকতে হবে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া জ্বর শনাক্ত করা যায়, তবে সাধারণত রক্ত পরীক্ষা ছাড়া রোগের লক্ষণ দেখেই চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করা হয়ে থাকে। এই জ্বরে মৃত্যুর সম্ভাবনা খুবই কম বা অতি বিরল।

ভাইরাল ফিভার : ভাইরাল ফিভার বা ভাইরাস জ্বর বছরের যে কোনো সময়ে হতে পারে। তবে সাধারণত গ্রীষ্মকালেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। ভাইরাল ফিভার ভাইরাস জীবাণুর সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। জ্বরের শুরুতে এর প্রকৃতি বোঝা না গেলেও পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাল ফিভার চিহ্নিত করা সম্ভব। সাধারণ লক্ষণ হলো হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ও হাতে-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা, খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া, শরীরের চামড়ায় বা ত্বকে র‌্যাশ দেখা দেওয়া ইত‌্যাদি। একইসঙ্গে শরীরের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত জ্বরের কারণে কখনও কখনও খিঁচুনি হতে পারে। এই সময় দ্রুত জ্বর কমাতে সারা শরীর ভিজে গামছা বা তোয়ালে দিয়ে মুছতে হবে। মাথায় জল দিতে হবে। রোগীকে পাখার তলায় রাখুন। জ্বর ও শরীরের ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। জ্বর বেশিমাত্রায় (১০২) হলে মলদ্বারে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। খাবার স্যালাইন, ফলের রস, সরবত ইত্যাদি তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে এবং অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। অন্যান্য উপসর্গের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বিশেষ করে ‌অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না। রোগীকে ঠাণ্ডা জল দিয়ে স্পঞ্জ করান। সব খাবারই পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে। তবে তরল খাবার অবশ্যই বেশি বেশি খাওয়া উচিত। টক জাতীয় ফল যেমন— বাতাবি লেবু, আমড়া, কমলালেবু, ইত্যাদি খেতে হবে। সংক্রামক ভাইরাল ফিভার যেমন— ইনফ্লুয়েঞ্জা, পক্স, মাম্পস এসব ক্ষেত্রে রোগ যাতে অন্যের শরীরে সংক্রমিত হতে না পারে সেজন্য আক্রান্ত রোগীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা করলে ভালো। আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি-কাশি থেকে নিরাপদ দূরে থাকুন। রোগীর কাপড় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সব সময় মশারির ভেতরে রেখে পরিচর্যা করুন। শিশু এবং বৃদ্ধদের ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে রাখুন। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেন।

ম্যালেরিয়া : বিশেষ এক ধরনের মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগ হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। এ রোগে আক্রান্ত হলে বার বার জ্বর এবং কাঁপুনি দেখা দেয়। এটি এমনকি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। স্ত্রী এনোফিলিস মশার মাধ্যমে ম্যলেরিয়ার জীবাণু ছড়ায়। ম্যালেরিয়া আক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে মশা কামড়ায় তখন এটি নিজের মধ্যে এক ধরনের জীবাণু গ্রহণ করে। এই মশা অন্য কাউকে কামড়ালে তখন তাঁর রক্তে ম্যালেরিয়া জীবাণু ছড়ায় এবং তিনি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। গর্ভবতী মহিলা যদি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন তাহলে তাঁর গর্ভে থাকা সন্তানের মধ্যেও জীবাণু ছড়ায়। আবার ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি কাউকে রক্ত দিলে তাঁরও সংক্রমণ হতে পারে।

ম্যলেরিয়া হলে সামান্য অথবা তীব্র কাঁপুনি, শীত অনুভূত হওয়া, প্রচণ্ড জ্বর, অত্যধিক ঘাম, ক্লান্তি, অবসাদ ছাড়াও মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়েরিয়া হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দু’বার রক্ত পরীক্ষা করতে হতে পারে। প্রথম সতর্কতা হিসেবে মশারি ব্যবহার করতে হবে। ঘরের দেওয়ালে কীটনাশক ওষুধ দিলে ভালো হয়। এ রোগ হলে রক্তশূন্যতা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, শরীরে জলশূন্যতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।

টাইফয়েড : টাইফয়েড জ্বরের জন্য স্যালমোনেল্লা বা ব‌্যাসিলাস টাইফোসা নামক ব‌্যাকটিরিয়া দায়ী। সাধারণ দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে টাইফয়েড হতে পারে। এই রোগ হলে তীব্র জ্বর, মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, পায়খানার সমস্যা, ডায়েরিয়া, চামড়ায় লালচে দানা বা র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও শরীরের ওজন কমতে পারে, পেট ফোলা, পেট ফাঁপতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে রোগী প্রলাপও বকে। এক্ষেত্রে রোগের ইতিহাস জানা দরকার, রক্ত পরীক্ষা, বোন ম্যারো টেস্ট জরুরী। রোগ ধরা পড়লে কাল বিলম্ব না করে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। পথ্য বলতে পর্যাপ্ত তরল খাবার। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারই ভালো। এ রোগ প্রতিরোধে রোগীকেই সচেতন হতে হবে। ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খাবার খেতে হবে। বাসি খাবার বিশেষ করে শাকসবজি না খাওয়াই ভালো। সবজি গরম করে খাওয়া উচিত। 

অনুলিখন : অশোক সেন