SAVE WEST BENGAL FROM TRINAMOOL CONGRESS

RESIST FASCIST TERROR IN WB BY TMC-MAOIST-POLICE-MEDIA NEXUS

(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)

Friday, April 5, 2019

নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা, ৩ এপ্রিল— আরো বিপাকে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারে আকাশছোঁয়া সম্পত্তি, জমি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এবার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তৃণমূলের ডায়মন্ডহারবারের প্রার্থী অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রীকে তলব করল শুল্ক দপ্তর। বিমানবন্দর কাণ্ডেই তাঁকে আগামী ৮এপ্রিল স্ট্র্যান্ড রোডে কাস্টমসের অফিসে হাজিরা দেওয়ার সমন পাঠিয়েছে শুল্ক দপ্তর। শুধু তাই নয়, যদি তিনি জেরা এড়িয়ে যান কিংবা বিভ্রান্তিকর নথি জমা দেন তাহলে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে বলেও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে সমনের চিঠিতে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যা তলবের মুখে পড়ছেন শুল্ক দপ্তরের, এই ঘটনা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। গত ১৫মার্চ রাতে ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় ফেরার সময় শুল্ক দপ্তরের তল্লাশির মুখে পড়া, অসহযোগিতা করা, রাজ্য পুলিশের প্রভাব ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি শুল্ক দপ্তরের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে থাকা সন্দেহভাজন তিনটি ব্যাগে সোনা (গহনা) ছিল, যা তল্লাশি করতেই বাধার মুখে পড়তে হয় শুল্ক দপ্তরকে। দু’সপ্তাহ আগে বিমানবন্দর কাণ্ডে নাম জড়ায় অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী’র। শুল্ক দপ্তরের তরফে অভিযোগ ওঠে, ব্যাঙ্কক থেকে ফেরার সময় তাঁর সন্দেহভাজন ব্যাগ পরীক্ষা করতে বাধা দিয়েছিলেন অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী রুজিরা নারুলা। এমনকি তিনি ‘প্রভাব’ খাটান, তার জন্য বিমানবন্দরে ভেতরে ছুটে আসতে হয় রাজ্য পুলিশকে। শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকদের হুমকি দেয় পুলিশ। বিমানবন্দরে ব্যাগ পরীক্ষার মত সাধারণ বিষয়ে শাসকদলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতার স্ত্রী’র এত সংবেদনশীল হয়ে ওঠায় সন্দেহ দেখা দেয়। গত ২৬মার্চ দমদম বিমানবন্দরে প্রিন্সিপাল কমিশনার অব কাস্টমসের তরফে এই তলবের চিঠি [এফ নং. এস ৩২(এমআইএসসি)-১৫/২০১৯এপি] পাঠানো হয়। কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬২-র ১৩৩ধারায় তাঁকে সশরীরে তলব করা হয়েছে। যে ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়েছিল প্রশাসন, যে ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করে খোদ অভিষেক সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন সেই ঘটনাতেই এবার তলবের মুখে পড়তে হলো মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য রুজিরা নারুলাকে। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে সারদা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই সলিসিটর জেনারেল জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত এই ঘটনায় পিটিশন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। শুল্ক দপ্তরের তলব ৮এপ্রিল। ঐ দিনই আদালতেও পিটিশন দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সলিসিটর জেনারেলকে। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবিরও। শুল্ক দপ্তর সূত্রের দাবি, ১৫মার্চ রাত প্রায় বারোটা চল্লিশ নাগাদ থাই এয়ারওয়েজের বিমানে (টিজি ৩১৩) দমদমে নামেন দু’জন মহিলা। একজনের নাম রুজিরা নারুলা, অন্যজন মেনকা গম্ভীর। রুজিরা নারুলা অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী বলেই দাবি শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকদের। তাঁদের কাছে থাই পাসপোর্টও মেলে। রুজিরা নারুলার পাসপোর্ট নম্বর- এএ৫৬৬৩৭৫৭। দ্বিতীয় মহিলার পাসপোর্ট নম্বর- এএ৫২৬৩৩৮৭। শুল্ক দপ্তরের এফআইআরে স্পষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে হয়েছে রাত ১টা ১০মিনিট বিমানবন্দর থেকে বেরনোর সময় শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা ঐ দুই মহিলাকে আটকান। প্রথমেই অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী ও তাঁর বান্ধবী পাসপোর্ট দেখাতে অস্বীকার করেন। তা নিয়ে কথা কাটাকাটিও হয়। এমনকি তাঁরা যে প্রভাবশালী, তাঁদের আটকানোর জন্য খেসারত দিতে হবে, শুল্ক দপ্তরের কর্তব্যরত আধিকারিকদের এমন হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী রুজিরা নারুলার কাছে তিনটি ব্যাগেজ, তাঁর বান্ধবীর কাছে দু’টি ব্যাগেজ ও একটি করে হ্যান্ড লাগেজ ছিল। সাতটি ব্যাগের মধ্যে তিনটি ব্যাগে সোনার গয়না ছিল। শুল্ক দপ্তরের এক মহিলা আধিকারিক তাঁর ব্যাগ খুলতে বলায় ঐ দুই মহিলা অশ্রাব্যভাষায় তাঁদের গালিগালাজ করেন। এরই মধ্যে রুজিরা নারুলা একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি জানান। তার কিছুক্ষণ পরেই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানার আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত হন এবং তাঁরা জানান দু’জনের মধ্যে একজন সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী। কোনরকম চেকিং ছাড়াই তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারেবারে বলতে থাকেন পুলিশ আধিকারিকরা। রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয় এই ঘটনায়। প্রথমে অস্বীকার করলেও শেষমেশ ডায়মন্ডহারবারে দলীয় কার্যালয়ে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ধরে সাংবাদিক বৈঠক করে তা সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন ‘যুবরাজ’ অভিষেক ব্যানার্জি। আর সেই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই আরো বেকায়দায় পড়তে হয় রুজিরা নারুলাকে। অভিষেক ব্যানার্জির সাংবাদিক বৈঠকের পরেই তাঁর স্ত্রী-র পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিতর্ক সামনে আসে। সেই বিতর্ক আরো জোরালো হয় অভিষেক ব্যানার্জির তরফে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় তাঁর স্ত্রী’র দেওয়া তথ্যে। অভিষেক ব্যানার্জি দাবি করেছিলেন, ‘আমার স্ত্রী জন্ম ও বেড়ে ওঠা ব্যাঙ্ককে। তাই থাই পাসপোর্ট। ও এখানকার ভোটারও নয়’। সেই বিতর্কের জেরেই আবার তথ্য বিকৃতির অভিযোগে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে রুজিরা নারুলাকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে। এই নোটিসে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের নাগরিক রুজিরা নারুলাকে ব্যাঙ্ককের ভারতীয় দূতাবাসকে ২০১৬-র ৮জানুয়ারি পিআইও কার্ড দিয়েছিল। কার্ডে তাঁর পিতার নাম নিফন নারুলা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তার প্রায় দেড় বছরের মাথায় ওসিআই কার্ডের জন্য জমা দেওয়া নথিতে তিনি উল্লেখ করেন তাঁর পিতার নাম গুরশরণ সিং আহুজা, বাড়ি নয়াদিল্লির রাজৌরি গার্ডেনে। ২০১৬’র জানুয়ারি থেকে ২০১৭’র নভেম্বরের মধ্যে বেমালুম বদলে গেছে পিতার নামও! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নোটিসে স্পষ্ট, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ভারতীয় নাগরিক না হয়েও ভারতীয় নাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিপন্ন করে প্যান কার্ড জোগাড় করেছেন। নোটিসে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয় খতিয়ে দেখেছে এবং নাগরিকত্ব আইনের ৭ডি ধারা অনুযায়ী রুজিরা নারুলার ওসিআই কার্ড বাতিল হয়ে যাবার কথা। কেন বাতিল হবে না, এই মর্মেই কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়েছে।

জেরার জন্য অভিষেকের স্ত্রীকে ৮ এপ্রিল তলব করল কাস্টমস - Ganashakti Bengali