SAVE WEST BENGAL FROM TRINAMOOL CONGRESS

RESIST FASCIST TERROR IN WB BY TMC-MAOIST-POLICE-MEDIA NEXUS

(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)

Wednesday, May 3, 2017

NARADA-Journalist Mathew Samuel: আতঙ্ক কেন তদন্তে? - রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় “It is very difficult to believe that a fair and impartial enquiry or investigation will be conducted by the State Police against their masters in Government or their own high-ranked Officer.” অর্থাৎ এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত বা অনুসন্ধান রাজ্য পুলিশের দ্বারা পরিচালিত হবে তাদের সরকারি পরিচালক বা তাঁদেরই ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। উপরোক্ত পর্যবেক্ষণ ক্যালকাটা হাইকোর্টের মাননীয়া প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও মাননীয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর। পর্যবেক্ষণটি নারদ স্টিং অপারেশন মামলায়। ১৪ই মার্চ, ২০১৬ পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারতবাসী বিস্মিত টেলিভিশনের পর্দায় মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও পুলিশ আধিকারিক (আই পি এস অফিসার) লক্ষ লক্ষ টাকা নিচ্ছেন একটি ভুয়ো কোম্পানির প্রতিনিধির কাছ থেকে এই প্রতিশ্রুতিতে যে তারা সহযোগিতা করবে উক্ত কোম্পানির ব্যবসার উন্নতিতে তাদের যে ক্ষমতা রয়েছে তাকে ব্যবহার করে। এই ঘটনা সত্য কি মিথ্যা তা জানার জন্য ক্যালকাটা হাইকোর্টে অমিতাভ চক্রবর্তী ও আরো দুজন জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন এই আবেদন করে যে একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সি বি আই) দিয়ে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, আমলাদের টাকা নেওয়ার যা সম্প্রচারিত হয়েছে তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্যে। ১৮ই মার্চ, ২০১৬ এই দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয় এবং ১৭ই মার্চ, ২০১৭ ক্যালকাটা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দান করেন এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা শেষ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিক তদন্তের সময়সীমা বৃদ্ধি করে এক মাস করে। আশ্চর্যের বিষয় রাজ্য সরকার ক্যালকাটা হাইকোর্টের উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে এবং সুপ্রিম কোর্টে নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা করে মামলা প্রত্যাহার করে। আইন প্রণয়নকারী এবং আইনের রক্ষকদের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ যেখানে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, আমলা যুক্ত যারা কিনা আইন প্রণয়নকারী ও আইনের রক্ষক, তাঁদেরই বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ। আশ্চর্যের বিষয় অ্যাডভোকেট জেনারেল কেন্দ্রীয় সংস্থার দ্বারা তদন্তের বিরোধিতা করেন এবং অভিযুক্তদের আইনজীবীদের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা তদন্তের কোন প্রয়োজন নেই। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার ক্যালকাটা হাইকোর্টে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে সরকারি অর্থ ব্যয় করে। উল্লেখ্য, সারদা মামলার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সি বি আই) দ্বারা তদন্ত আটকানোর জন্যে শোনা যায় রাজ্য সরকার সরকারি কোষাগার থেকে ১১ কোটি টাকা ব্যয় করে ভারতবর্ষের প্রথিতযশা আইনজীবীদের নিযুক্ত করেন। বিপন্ন তথাকথিত গণতন্ত্র ও তথাকথিত সংশোধনীয় ব্যবস্থা। রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিকদের ঘোরাফেরা সর্বজনবিদিত। পশ্চিমবাংলায় দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু সারদা ও নারদ কেলেঙ্কারি দেখিয়ে দিল পশ্চিমবাংলায় দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের সংখ্যা কম নেই। ক্যালকাটা হাইকোর্টের নির্দেশে চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছে যে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, আমলার টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ সঠিক। তবুও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে হচ্ছে এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যে মুখ্যমন্ত্রী বঙ্গারু দত্তাত্রেয়র ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। যে মুখ্যমন্ত্রী জর্জ ফার্নানডেজের কফিন কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে সরে আসেন, সেই মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় একবারও বললেন না উক্ত অভিযুক্তদের মন্ত্রী, সাংসদ বা বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করতে। পরন্তু অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের কোন খবর মানুষের কাছে নেই। ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি উৎসবে বক্তৃতায় বলেন ‘‘কেন আজকে টাকার বিনিময়ে কোর্টে বিচার হবে?’’ তিনি আরো বলেন, “corruption has made inroads into the Judiciary and Democracy as a whole. It is unfortunate we have own freedom but not economic freedom.” অর্থাৎ দুর্নীতি বিচার ব্যবস্থায় এবং গণতন্ত্রে সম্পূর্ণভাবে হানা দিয়েছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কিন্তু অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাইনি। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর উক্ত বক্তব্যটি বহুলভাবে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। পরে কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনীজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও আমরা কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণকারী আদালত অবমাননার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করার জন্যে। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মাননীয় অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর আদালত উক্ত অবমাননার মামলা দীর্ঘ শুনানির পরে গ্রহণ করেননি কিন্তু এই পর্যবেক্ষণ করেন যে, ‘‘We make it clear that our reluctance to initiate such proceedings should not be taken as an approval of the statement made by the speaker. One must not lose sight of the fact that the speaker was not an ordinary personality but the Chief Minister of the State. It is expected that when criticism is made from such high constitutional functionary, the same should be laced with moderation and temperance.” আশ্চর্যের বিষয় মুখ্যমন্ত্রী বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করতে কুণ্ঠিত হননি যদিও তার কাছে কোন নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না টাকার বিনিময়ে কোর্টে বিচার হওয়ার। অথচ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী টিভির পর্দাতে তাঁর দলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের টাকা নেওয়ার ছবি দেখেও বলছেন এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। হায় গণতন্ত্র! হায় রাজনীতি! মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও আমলাদের দুর্নীতি এক সামাজিক ব্যাধি যা সাধারণ মানুষের সরকারের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতায় অনীহা প্রকাশ করে। সমাজকে প্রতিবন্ধী করে দেয়। তবুও সরকার সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুর্নীতিগ্রস্তদের হয়ে আদালতে নিরপেক্ষ তদন্তের বিরুদ্ধে সওয়াল করে। আশ্চর্যের বিষয় সরকার ভিডিও ফুটেজে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থ নেওয়ার ঘটনায় তদন্ত করায় না কিন্তু একজন অভিযুক্তের স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যুৎগতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ম্যাথু স্যামুয়েলের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে যিনি নারদ নিউজের হয়ে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, আমলাদের ঘুষ নেওয়ার স্টিং অপারেশনটি‍‌ করেন। সারা রাজ্যে আজ একদিকে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি অন্যদিকে রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। সংবিধানের শপথ উপেক্ষিত। রাজ্যে মাৎস্যন্যায় চলছে। বিচারব্যবস্থার রায় সরকারের বিরুদ্ধে গেলেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিচার ব্যবস্থার প্রতি তীব্র আক্রমণ করছেন। নারদ বা সারদাই হোক বা মধ্যমগ্রামে কিশোরীর উপর ধর্ষণ হত্যাই হোক বা পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ হোক বা বর্ধমানের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা বা গণনাট্য সঙ্ঘের কমল গায়েন হত্যা, সবেতেই রাজ্য সরকার নিরপেক্ষ স্বচ্ছ তদন্তের বিরুদ্ধাচরণ করছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কুৎসা করতে পিছপা হচ্ছেন না। মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, আমলারা যদি উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন তাহলে প্রত্যন্ত গ্রামের শরৎবাবুর অভাগী বা তাঁর স্বামী রসিক বাগ বা তাঁর ছেলে কাঙ্গালী কোন্‌ ভরসায় এই সংসদীয় গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করবেন। নারদ বা সারদা কেলেঙ্কারি ভারতবর্ষের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। দুর্নীতিগ্রস্ত তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ভারতবর্ষের সংবিধানকে কলুষিত করেছেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করে নিরপেক্ষ স্বচ্ছ তদন্তকে আটকানোর জন্য আদালতে সওয়াল করেছেন। এতদসত্ত্বেও ভারতবর্ষের বিচারব্যবস্থা ভারতের সংবিধানের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে নারদ, সারদা কেলেঙ্কারি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা নিরপেক্ষ স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ দান করেছেন। তবুও মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দ্রুততার সাথে স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করবে কিনা কারণ সারদা চিট ফান্ড মামলায় এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ অভিযুক্তরা অধরা। প্রতারিতরা টাকা ফেরত পায়নি। কোথায় যেন তদন্তের গতি শ্লথ। মানুষের মনে এই প্রশ্ন জাগছে তাহলে কি রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে কোন গোপন আঁতাত হয়েছে যাতে তদন্তের গতি শ্লথ হয়। অভিযুক্তরা রেহাই পায়। প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা রাজ্যের সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় আর কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই নিরপেক্ষ স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে দুই গোয়েন্দা সংস্থাকেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে আনার সময় হয়েছে। আতঙ্কিত মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আতঙ্কিত তাঁর দলের অভিযুক্ত মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা। কিন্তু কেন এই আতঙ্ক? তদন্ত মানেই দোষী নয়। তদন্তর শেষে দেখা যাক না উক্ত বীরপুঙ্গব মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা দোষী বা নির্দোষ। মানুষ এখন তাকিয়ে আছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও তার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার দিকে। একথা বলতেই হবে ভারতবর্ষের তথাকথিত সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে, রাজনীতি থেকে দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি দূর করতে শুধুমাত্র বিচার ব্যবস্থার উপর নির্ভর করলেই হবে না। সঙ্ঘবদ্ধভাবে মানুষকে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদ করতে হবে। (লেখক কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী) Intro ক‍লকাতা হাইকোর্ট নারদ কেলেঙ্কারিতে সি বি আই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও সেই রায়কে স্বীকৃতি দিচ্ছে। তারপরেও শাসক দল চেষ্টা করছে সি বি আই তদন্ত বন্ধ করতে। কেন এই আতঙ্ক? সি বি আই পারবে তো শীর্ষ আদালতের রায়কে মান্যতা দিয়ে তদন্ত করতে? এই প্রসঙ্গেই লেখা হয়েছে প্রবন্ধটি।